Monday 21 February 2011

ছোট্ট এক ডিভাইস মোবাইল কম্পানিগুলোর জন্য সত্যিকারের হুমকি হয়ে উঠতে যাচ্ছে!




গ্রামীণফোন ওরফে হারামীর ফোনের দৈনিক আয়, অর্থাৎ গ্রাহকের পকেট থেকে প্রতিদিন কতো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে- সে সম্পর্কে ধারণা আছে আপনার? থাকুক কিংবা না থাকুক, শুধু জেনে রাখুন সংখ্যাটা কোটির ওপরে। ধরনের দিক থেকে এটা প্রায় চাঁদাবাজির নামান্তর এবং শুধু বাংলাদেশেই প্রায় দেড় কোটি মানুষকে নিত্য অসন্তোষে ফেলে যা চলছে বছরের পর বছর। এই যখন পরিস্থিতি, তখন সুসংবাদ হয়ে এল ছোট্ট এক 'কিলার' ডিভাইস। বলা হচ্ছে, ছোট্ট এই ডিভাইস মোবাইল কম্পানিগুলোকে প্রায় পথে বসিয়ে দিতে পারে! ডিভাইসটি ইতিমধ্যে তোলপাড় তুলেছে প্রযুক্তি অঙ্গনে। পিসি ম্যাগাজিন এই ডিভাইসটিকে ২০০৯ সালের সেরা প্রযুক্তিপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস, লস এঞ্জেলেস টাইমস, বোস্টন গ্লোবের মতো নামি পত্রিকা এবং সিবিএস ও সিএনবিসির মতো চ্যানেল পর্যন্ত ‌এই ডিভাইসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

জিনিসটি আসলে কী
আকারে ছোট এই ডিভাইসের নাম ম্যাজিক জ্যাক। এটা দিয়ে মোবাইল ব্যবহার বা ফোন করা যাবে বিনামূল্যেই। মোবাইল ফোন যে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে, সেই একই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে ইন্টারনেটের সাহায্যে ফোন করার কাজটি হবে। এই কাজের জন্য যেখানে হারামীর ফোনসহ অন্য মোবাইল কম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা প্রতিদিনই হাতিয়ে নিচ্ছে, ম্যাজিক জ্যাক দিয়ে সেটা করা যাবে একেবারে বিনামূল্যেই। ব্যবহারবিধিও সহজ। প্রথমে ম্যাজিক জ্যাক ডিভাইসটি ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে কম্পিউটারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। আর লাগবে একটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ। কম্পিউটারের মাত্র আট ফুট দূরত্বের মধ্যে কোনো মোবাইল ফোন থাকলে ডিভাইসটি সেটা নিজে নিজেই শনাক্ত করে নিয়ে তার মাধ্যমে কল করার কাজ করবে। তবে এজন্য ওই মোবাইলের (আট ফুট দূরত্বে সেটা যারই হোক না কেন) কোনো টাকা কাটা যাবে না। কল করার পুরো কাজই হবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। জিএসএম ঘরানার যে কোনো মোবাইল ফোন এই ডিভাইসে ব্যবহারযোগ্য।
এখন ডিভাইসটি ল্যান্ডফোনে ব্যবহার হচ্ছে এভাবে-


আসবে চার মাস পর, সুশীলদের উদ্বেগ
গত রোববার শেষ হওয়া প্রযুক্তি অঙ্গনের বৃহত্তম সমাবেশ কনজুমার ইলেকট্রনিকস শোতে ম্যাজিক জ্যাকের নির্মাতা ওয়াইম্যাক্স কর্পোরেশন জানিয়েছে, সামনের মে মাসেই তারা যন্ত্রটি বাজারজাত করবে। প্রাথমিকভাবে এর মূল্য ধরা হয়েছে বাংলাদেশী মূদ্রায় দু হাজার টাকার মতো। ডিভাইসের এই সামান্য মূল্য দিয়েই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় কোনো টাকা ছাড়াই কথা বলা যাবে এক বছর। এর আগে ওয়াইম্যাক্স কর্পোরেশন ল্যান্ডফোনে ব্যবহারের জন্য ম্যাজিক জ্যাক ছেড়েছিল বাজারে। মাত্র দু বছরে ওই ডিভাইসটি বিক্রি হয়েছে মাত্র ৫০ লাখ! মার্কিন মোবাইল কম্পানিগুলো ব্যাপারটায় রীতিমতো স্তম্ভিত। তা এতোটাই যে, এখন পর্যন্ত তাদের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াই মেলেনি। তবে বিদেশী সুশীল সমাজকে দিয়ে তারা ইতিমধ্যে এই ডিভাইস ব্যবহার বৈধ কিংবা নৈতিক কিনা- তা নিয়ে সুশীল প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তা হবেই না বা কেন? কারোরই সন্দেহ থাকার কথা নয় যে, ম্যাজিক জ্যাক বাজারে আসলে খুব দ্রুতই জনপ্রিয়তা পাবে এবং অতি অবশ্যই মোবাইল কম্পানিগুলোর জন্য হয়ে উঠবে সত্যিকারের হুমকি! যদিও আসতে দেরি, তবে এই ফাঁকে বাংলাদেশের সম্ভাব্য চিত্রটি একদফা কল্পনা করা যেতে পারে।

ম্যাজিক জ্যাক এলে বাংলাদেশে কী কী ঘটতে পারে?
১. অথর্ব বিটিআরসি যথারীতি মোবাইল কম্পানিগুলোর ধ্বজা ধরার চেষ্টা করে যাবে।
২. মোবাইল কম্পানিগুলোর চাপে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ম্যাজিক জ্যাকের ব্যবহার নিয়ে সতর্কবাণী শোনাবে বারেবারে।
৩. জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ম্যাজিক জ্যাকের পিছনে আঙ্গুল দেওয়ার চেষ্টায় হন্যে হয়ে উঠবে।
৪. মোবাইল কম্পানিগুলোর 'দাসানুদাস' পত্র-পত্রিকাগুলো ম্যাজিক জ্যাকের বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে প্রতিবেদন ছাপবে।
৫. 'ইহার মাধ্যমে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাচ্ছে'- শীর্ষক ধোঁয়া তুলে অচিরেই ডিভাইসটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হবে।

0 Comments:

Post a Comment

Subscribe to Post Comments [Atom]

<< Home